দুর্নীতি মামলায় খোকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
দুর্নীতি মামলায় খোকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

দুর্নীতি মামলায় খোকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

বিডি নিউজ ৬৪: বাংলাদেশের বিএনপির একজন নেতা, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ঢাকায় একটি বাড়ি বাজেয়াপ্ত করার পর, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া এখন চলছে।
দুদকের করা মামলায় মি. হোসেনের অনুপস্থিতিতে বিচার হওয়ার পর গত বছর তার বাড়ি ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়েছিল।
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং কর ফাঁকির অভিযোগে এই বিএনপি বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৭ সালে তদন্ত শুরু করে। পরের বছর এপ্রিল মাসে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
সেই মামলার আদেশে গত বছরের অক্টোবরের ২০ তারিখে সেই সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়। সব মিলিয়ে তার ১০ কোটি ৫ লাখ ২১ হাজার ৮৩২ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কারাদণ্ড ও জরিমানাও করা হয়। এর অংশ হিসাবেই বুধবার গুলশানে মি. হোসেনের বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করার নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে ঢাকার জেলা প্রশাসন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বিবিসিকে জানিয়েছেন, বুধবার বাড়িটি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে বাড়িটির ভাড়াটিয়ারা সরকারের ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকার জন্য আবেদন করেছেন,কিন্তু সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বর্তমানে এই বাড়িটি একটি বায়িং হাউজ বিদেশি কর্মীদের জন্য গেস্ট হাউজ হিসাবে ব্যবহার করে।
সেই সংস্থার আইনজীবী জাফরুল হাসান বিবিসিকে জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতে আবেদনের পর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িটিতে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি তারা আগেই সরকারের ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকার জন্যও আবেদন করেছেন। সেটি মঞ্জুর না হলে তারা বিকল্প কোথাও চলে যাবেন।
গাজীপুরে বুড়িগঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে সাদেক হোসেন খোকার অংশ হিসাবে ৮৮ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম আলম।
নারায়ণগঞ্জেও মি. হোসেনের প্রায় ৫০.৮৯ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কার্যক্রম শেষের পথে বলে জানিয়েছেন সেখানকার জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া। ঢাকায় একটি ব্যাংকে থাকা নগদ টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খোরশেদ আলম বিবিসিকে বলছেন, ২০০৭ সালে মি. হোসেনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে তদন্ত শুরু হয়, তারই ধারাবাহিকতায় এখন শুধুমাত্র আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তবে ভবিষ্যতে দেশে ফিরে আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করার সুযোগ থাকছে সাদেক হোসেন খোকার। তবে সেজন্য তাকে বিলম্ব হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
শারীরিক অসুস্থতার কারণ জানিয়ে মি. হোসেন গত কয়েক বছর ধরেই আমেরিকায় রয়েছেন।
তার আইনজীবী মহসিন মিয়ার অভিযোগ, বিরোধী বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা হওয়ায়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন এই তদন্ত শুরু করে।
কিন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারণে চিকিৎসকের অনুমতি না থাকায় মি. হোসেন বিচারের সময় দেশে আসতে পারেননি বলে তিনি জানান। তিনি দেশে ফিরলেই এই আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে এবং তিনি খালাস পাবেন বলে আশাবাদী আইনজীবী মহসিন মিয়া।
তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কথা নাকচ করে দিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খোরশেদ আলম। তিনি বলছেন, সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ এবং আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই আইন অনুযায়ী এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকার মেয়র থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিয়মবর্হিভুতভাবে কয়েকটি মার্কেটের শতাধিক দোকান বরাদ্দের অভিযোগে সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে গত মে মাসেই আরেকটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *