গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালীন সবাই বিরোধিতা করেছিল

বিডি নিউজ ৬৪: ক্ষুদ্রঋণ সংক্রান্ত ড. ইউনূসের ৩ বছর মেয়াদি প্রকল্প শেষ হওয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালীন সবাই এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক এখন পুরোপুরি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।’

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাধার মুখেও সরকার আলাদা কন্সিটিটিউশন করে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থা অর্থায়নে এগিয়ে আসে। সরকার আলাদা আইন করে এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিল। প্রথম দিকে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রায়ত্ব কিংবা বেসরকারি কোনো ব্যাংক সাপোর্ট দেয়নি। বরং তারা সবাই একসঙ্গে বিরোধিতা করেছিল।’

আবুল মাল আবদুল মুহিত আরো বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর প্রান্তিক পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৩ সালের দিকে পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটিও সরকারের নিজস্ব সৃষ্টি।’

ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘ক্ষুদ্র ঋণের সুদের হার ব্যাংক ঋণের চেয়ে অনেক বেশি। বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ঋণের উপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিয়ে থাকে। তারপরও মোট ক্ষুদ্র ঋণের চাহিদার ৪৫ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। ৫৫ শতাংশ করা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রচুর পরিমাণ তারল্য রয়েছে। টাকা থাকলেও ঋণ দেয়া যাচ্ছে না। এজন্য দু’টির মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে আর্থিক খাতের সাফল্য নিশ্চিত করা যাবে না।’

ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, ‘পিকেএসএফ শুধু ক্ষুদ্র ঋণ নয়, উপযুক্ত অর্থায়নের দিকে নজর দিচ্ছে। যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই দিচ্ছে। একই সঙ্গে উৎপাদনকারীকে বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কাজ করছে। পণ্য বাজারজাতকরণে সুযোগ সৃষ্টি করছে।’

তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনে বহুমুখি উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দেশের ১৫০টি উপজেলায় ‘সমৃদ্ধি প্রকল্প’ হাতে নেয়া হয়েছে। এখন সমৃদ্ধি সেন্টার তৈরির কাজ চলছে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে দারিদ্র্য বিমোচন ও বিভিন্ন খাতে অবদান রাখার জন্য দুজন ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। দেশে কাকড়া উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও রপ্তানিতে অবদান রাখায় পিকেএসএফ’র পক্ষ থেকে ভিয়েতনামের নাগরিক ফাম দি হংকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়।

এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ অবদানের জন্য ইউমেনস একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা জামিল চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান ও পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *