বিডি নিউজ ৬৪: গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরের হতে যাওয়া বিয়ে বুধবার সামাজিক প্রতিরোধের মুখে বন্ধ হয়েছে। তারা গোপনে ইতিপূর্বে রাজবাড়ীর দুই আইনজীবিকে ম্যানেজ করে তাদের বিয়ের এ্যাফিডেভিট সম্পন্ন করেছিল।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলে এ বছর ৮ম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়া ওই ছাত্রীর সাথে একই ইউনিয়নের ইশাইল শিবরামপুর এলাকার বাবু সরদারের ছেলে সুমন সরদারের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সুমন পেশায় রাজমিস্ত্রির সহকারি। তারা গোপনে রাজবাড়ীর আদালতে গত ২৪/৭/২০১৬ তারিখে নোটারীয়ান এ্যাড: রফিকুল ইসলাম ও এ্যাড: পুর্ণিমা রাণীর সহায়তায় বিয়ের এ্যাফিডেভিট করে। যেখানে ওই ছাত্রীর বয়স ১৯ ও ছেলের বয়স ২৫ বছর দেখানো হয়েছে। কিন্তু ছাত্রীর জন্মসনদ (১৫/২/২০০০) ও ওই তরুণের জন্মসনদ (৯/২/১৯৯৮) অনুযায়ী উভয়ই বিয়ের ক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ক। আইনানুযায়ী বিয়ে ও জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে এ্যাফিডেফিট গ্রহণযোগ্য নয়।
এ দিকে ওই ছাত্রী ও তরুণের আদালতে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে বুধবার রাতে অনেকটা গোপনে তাদের সামাজিকভাবে বিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয় উভয় পরিবার। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আ. গণি মন্ডল, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রোকেয়া বেগম, শিক্ষক সুলতানউদ্দিন আহমেদ, এনজিও কর্মকর্তা আতাউর রহমান মঞ্জুসহ কয়েকজন বুধবার বিকেলে ওই ছাত্রীর বাড়ীতে যান। তারা বাল্যবিয়ের কুফল ও আইনগত শাস্তির দিক তুলে ধরলে উভয় পরিবার আলোচনা করে তাদের প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে বন্ধ রাখার অঙ্গীকার করেন।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সহিদুল ইসলাম গোয়ালন্দনিউজকে জানান, সামাজিক প্রতিরোধের কারণে তার এই ছাত্রীর আজ বাল্যবিয়ে বন্ধ হলো। রাজবাড়ীর কতিপয় নোটারিয়ান অনৈতিকভাবে এভাবে এ্যাফিডেফিট করিয়ে দিচ্ছে। এটাকে বিয়ে মনে করে গ্রামে তাদের কলমা পড়িয়ে ঘর সংসার করতে দেয়া হচ্ছে। এ রকম দু’য়েকটি ঘটনা জানাজানি হলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে গোপনেই থেকে যায়।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মনোয়ার হোসেন মোল্লা গোয়ালন্দনিউজকে জানান, বিয়ে ও জন্মসনদের ক্ষেত্রে এ্যাফিডেভিট অবৈধ ঘোষনা করেছে সরকার। রাজবাড়ীর সকল আইনজীবিকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কোন নোটারিয়ান এ ধরণের এ্যাফিডেভিটের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
bdnews64 বাংলাভাষায় প্রকাশিত দেশের সর্ববৃহৎ সংবাদ পোর্টাল