লক্ষীছড়িতে জনগণকে জিম্মি করে ইউপিডিএফ’র দাবী আদায়ের চেষ্টা ব্যর্থের পথে
লক্ষীছড়িতে জনগণকে জিম্মি করে ইউপিডিএফ’র দাবী আদায়ের চেষ্টা ব্যর্থের পথে

লক্ষীছড়িতে জনগণকে জিম্মি করে ইউপিডিএফ’র দাবী আদায়ের চেষ্টা ব্যর্থের পথে

বিডি নিউজ ৬৪: জনগণকে জিম্মি করে লক্ষ্মীছড়িতে ইউপিডিএফ’র দাবী আদায়ের চেষ্টা ব্যর্থ হতে চলেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টা ও সাধারণ মানুষের সাড়া না পাওয়ায় বাজার ফান্ড ঘোষিত লক্ষীছড়ি বাজার বয়কট করে বিকল্প বাজার সৃষ্টির অপচেষ্টায় সাড়া মিলছে না।

এদিকে, ইউপিডিএফ’র হুমকি দমকিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে সাধারণ মানুষ লক্ষীছড়ি বাজার মুখী হচ্ছে। ফলে ইউপিডিএফ’র কথিত বাজার বয়কটের ঘোষণা ব্যর্থ হতে চলেছে। স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করেছে লক্ষীছড়ি বাজার।

সূত্রগুলো জানায়, ইউপিডিএফ’র নেতৃত্বে মঙ্গলবার ও বুধবার লক্ষীছড়ি উপজেলার লেলাং, ভাগ্যাপাড়া ও চাইলাতলীতে স্থানীয়দের বাজার বসাতে বাধ্য করে। কিন্তু ইউপিডিএফ’র এ ডাকে তেমন কোন সাড়া ফেলতে পারেনি। ফলে ব্যর্থ হয় তাদের অপচেষ্টা।

স্থানীয় কয়েকজন অধিবাসী জানান, উৎপাদিত ফসল ও মালামাল নিয়ে ইউপিডিএফ প্রস্তাবিত বাজারগুলোতে গেলেও ক্রেতা না থাকায় বিক্রী না করে ফেরত নিতে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারী রাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমার নি:শর্ত মুক্তিসহ কয়েক দফা দাবী তুলে বাজার বয়কটের ডাক দেয় সুপার জ্যোতি মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ ও লক্ষীছড়ি বাজার বয়কট কমিটি নামে দু’টি পোষ্টার সর্বস্ব সংগঠন। যাদের নৈপথ্যে শক্তির যোগান দেয় পাহাড়ের অনিবন্ধিত আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।

দু’টি সংগঠনের মধ্যে সুপার জ্যোতি মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছিল স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। গত ৩ জানুয়ারী “নির্বাচিত জুম্ম প্রতিনিধি সংসদ” নাম সংবলিত একটি ই-মেইল থেকে সুপার জ্যোতি মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির আহ্বানে গত ৪ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধও পালন করা হয়। অবরোধ চলাকালীন সময়ে মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী কলেজ এলাকায় একটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগও করা হয়। ফলে অনেক পাহাড়ী লক্ষীছড়ি বাজারে আসা যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন উপজাতীয় জানান, লক্ষীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছে। বিষয়টি আইনগত ভাবে সমাধান হবে। কিন্তু এর জন্য জনগণকে জিম্মি করে দাবী আদায় অযৌক্তিক।

লক্ষীছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অজিত বিকাশ দত্ত জানান, লক্ষীছড়ি বাজারে পাহাড়ীরা না আসায় বাঙালী ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সাধারণ পাহাড়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

লক্ষীছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী জানান, ইউপিডিএফ’র ইন্দনেই কুচক্রী একটি মহল বাজার বয়কটের ঘোষণা দিলেও তা সাধারণ পাহাড়ীরা গ্রহণ করেননি।

লক্ষীছড়ি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ফোরকান হাওলাদার জানান, লক্ষীছড়ি বাজার চালু করার জন্য শুরু থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি লক্ষীছড়ি বাজার শীঘ্রই আগের রূপ ফিরে পাবে।

লক্ষীছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ আরিফ ইকবাল জানান, বাজারের সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

এর আগে, গত ১ জানুয়ারী রাতে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে লক্ষীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে সরকারি বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে নিরাপত্তা বাহিনী। পরের দিন আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৫ জানুয়ারী তাকে আদালতে সুপার জ্যোতি চাকমার জামিন চাওয়া হলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *