বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শনিবার দুপুরে কুয়াকাটার রাখাইন মার্কেট মাঠে সুন্দরবনের ‘নোয়া বাহিনীর’ সদস্য ১২জন জল্যদস্যুর আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েও যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৮-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ার উজ জামানসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন ও সমুদ্র উপকূলের জলদস্যুদের বর্তমান সরকার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। এরপরেও যারা আত্মসমর্পণ না করে দস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
র্যাব সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার বরিশাল র্যাব-৮-এর একটি দল সুন্দরবনের চাদপাই রেঞ্জের পশুর নদীতে অভিযান চালায়। অভিযানকালে সুন্দরবন এলাকার পুটখালী খালের ভিতরে জলদস্যুরা অবস্থান নেয়। এ সময় তারা র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে র্যাব-৮ জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আত্মসমর্পণকালে জলদস্যু বাহিনীর সদস্যরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ১০৫ রাউন্ড তাজা গোলাবারুদ জমা দেয়। এরমধ্যে ৭টি বিদেশি একনলা বন্দুক, ৮টি বিদেশি দোনলা বন্দুক, ২টি .২২ বোর বিদেশি এয়ার রাইফেল, ৩টি ওয়ান শুটার গান, ১টি তিন থ্রিনট থ্রি রাইফেল, ১টি বিদেশি রাইফেল এবং ৩টি বিদেশী কাটা বন্দুক ও ১ হাজার ১০৫ রাউন্ড তাজা গুলি রয়েছে।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন, নোয়া বাহিনীর প্রধান মো. বাকি বিল্ল¬াহ ওরফে নোয়া মিয়া (৩৭), মো. মনিরুল শেখ (৩৮), মো. মনজুর মোল্ল¬া (৪২), মো. মুক্ত শেখ (৩৭), মো. তরিকুল শেখ (৬০), মো. আকবর শেখ (৪২), মো. কিবরিয়া মোড়ল (৪০), মো. জাহাঙ্গীর শেখ (৪৮), মো. আলামিন সিকদার (৫০), মো. ইউনুস শেখ (৪০), মো. মিলাদুল মোল¬া (২৮) ও মো. মোশারেফ হোসেন (৩৭)।
তাদের বাড়ী বাগেরহাট জেলার মংলা ও রামপালের বিভিন্ন এলাকায়।
অনুষ্ঠানে আসাদুজাজামান খাঁন কামাল এর আগে আত্মসমর্পণকারী ৩৩ জন জলদস্যুর পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে অনুদান এবং শীতবস্ত্র প্রদান করেন।
বিগত ৭ মাসে ১৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৭ হাজার ৫৩১ রাউন্ড গোলাবারুসহ ৭টি বাহিনীর ৬০জন জলদস্যু র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে জানা যায়।