বিডি নিউজ ৬৪: বরিশালের গৌরনদীতে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করেন তার অভিভাবকগণ। তবে শেষ পর্যন্ত সহপাঠীদের সহায়তায় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে আপাতত বিয়ের পিড়ে থেকে রক্ষা পেল ওই কিশোরী।
স্থানীয় লোকজন, সহপাঠী ও স্বজনরা জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খাঞ্জাপুর গ্রামের মো. শহীদ হাওলাদারের কন্যা ও খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে একই গ্রামের মো. আবদুল আলীমের পুত্র সৌদী প্রবাসী মোঃ নুর আলমের (২৭) বিয়ের কথা পাকা করে মেয়েটির অভিভাবকগণ। দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গতকাল শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। সেই অনুযায়ী অনুষ্ঠানে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বিবাহ রেজিষ্টার(কাজী) মো. বেলাল হোসেনকে উপস্থিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত কয়েকজন অতিথি জানান, প্রায় শতাধিক আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। শুক্রবার দুপুরে বর পক্ষসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যহ্ন ভোজ শেষে বিয়ে রেজিষ্টার করার কাজ শুরু করা হয়।
বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের গৌরনদী উপজেলা সমন্বয়কারী আব্দুর কাদের জানান, কনের কয়েকজন সহপাঠী ও নাগরিক ফোরামের একাধিক সদস্য বাল্য বিয়ে আয়োজনের বিষয়টি তাদের সংগঠনের মাঠকর্মীকে জানান। মাঠকর্মী খোঁজ নিয়ে বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুর আলম সেরনিয়াবাদকে অবহিত করেন।
খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুর আলম সেরনিয়াবাদ বলেন, আমাকে পূর্বেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে ফিরে আসি। পরে জানতে পারি কনের বিয়ের বয়স হয়নি। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বয়সের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানার জন্য বরের বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে কনের বাবা গোপনে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কথা অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানের নিদের্শে বিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আফজাল হোসেন বলেন, উপজেলার মধ্যে কোথায়ও বিয়ে সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।