বিডি নিউজ ৬৪: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর, এই ১০ মাসে মোট ৪ হাজার ১৪৪ জন নারী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে মহিলা পরিষদ। মহিলা পরিষদ বলেছে, নারীবান্ধব স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিশেষ কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মহিলা পরিষদ ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইডের পরিচালক মাকসুদা আক্তার লাইলী। তিনি বলেন, গত ১০ মাসে ১৪টি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে তাঁরা এই পরিসংখ্যান পেয়েছেন। এতে দেখা যায়, এই সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৭৫ জন। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৩৪ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩১ জনকে, ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৪০ জনকে। উত্ত্যক্ত ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ৩৩১ জন। এর মধ্যে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে ২৪০ জনকে। উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা করেছেন আটজন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নির্যাতন করা হয়েছে ১২ জনকে এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭১ জন নারী।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মহিলা পরিষদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নারী আন্দোলন মনে করে এই অবস্থা চলতে পারে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধভাবে নারী ও কন্যার স্বাভাবিক বিকাশ, নারীর স্বাধীন চলাচল, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধ ও নির্মূলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। নারী ও কন্যার প্রতি বিরাজমান পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। বৈষম্যমূলক নীতিমালা ও আইন বাতিল করে সব নাগরিকের জনজীবন ও পারিবারিক জীবনে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে নারী ও কন্যার প্রতি সব ধরনের নির্যাতন প্রতিরোধে উদ্যোগ নিতে হবে। ১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়—এ বিষয়ে সরকারকে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।