বিডি নিউজ ৬৪: এ বছর থেকে সরকারি সব ধরনের কেনাকাটা হবে ই-টেন্ডারে। কাগজের দরপত্র বাদ দিয়ে সরকারি কেনাকাটায় দরপত্র ডিজিটালাইজেশনে জোর দিয়েছে সরকার। চলতি ২০১৬ সালেই সরকারি সব দপ্তরের কেনাকাটায় পুরোপুরি ই-টেন্ডার চালুর করার উদ্যোগ নেয়া হলেও ডাটা সেন্টারের ধারণক্ষমতা কম থাকায় সেই উদ্যোগে গতি আসছিল না। সেজন্য ২০০ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি নতুন স্ট্রেট অব-দ্য-আর্ট ডাটা সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)।
নতুন এই ডাটা সেন্টার স্থাপন হলে ২০১৬ সালেই সরকারি সব সংস্থাকে ই-টেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন।
ডাটা সেন্টারটি তৈরি করার জন্য ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এজন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব কাজী সফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংক পক্ষে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজেশ্বরী এস পারালকার নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে কাজী সফিকুল আযম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহাতায় এই ডাটা সেন্টার স্থাপিত হলে সরকারি কেনাকাটায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। ডাটা সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা হলে ইজিপি কার্যক্রম স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।’
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে একটি নতুন স্ট্রেট অব-দ্য-আর্ট ডাটা সেন্টার তৈরি হবে, যার ধারণক্ষমতা হবে ২০০ টেরাবাইট। এছাড়াও একটি মিরর সাইট স্থাপিত হবে যা বর্তমানে অবস্থিত নিম্ন ধারণক্ষমতার ডাটা সেন্টারকে প্রতিস্থাপন করবে। মিরর সাইটটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধিকতর উন্নত হবে এবং বর্তমান ডাটা সেন্টারের ১৮০ গুণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে যেখানে প্রায় ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন টেন্ডার সংরক্ষণ করা যাবে এবং ৩ লাখ ২৫ হাজার নিবন্ধিত দরদাতার তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে।
এতে আরো জানানো হয়, ২০০৭ সাল হতে বিশ্বব্যাংকের সহাতায় ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট-২’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। এই প্রকল্পের আওতায় ইলেকট্রিক প্রকিউরমেন্ট শুরু হয়। সরকারের অধিক ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্নকারী হিসেবে পরিচিত চারটি সরকারি সংস্থা- সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে এর আওতায় আনা সম্ভব হয়। এ প্রকল্পের ফলে সরকারি ক্রয় স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি যেমন- টেন্ডার প্রক্রিয়ারকরণের সময় ২০১২ সালের ৫১ দিন হতে ২০১৫ সালে ২৯ দিনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এই ঋণে সুদের হার শতকরা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ঋণটি ৬ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধযোগ্য।
সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ২০১৬ সালেই মধ্যেই সরকারি সব দপ্তরে কেনাকাটায় পুরোপুরি ই-টেন্ডার চালুর করার। কিন্তু তবে ডাটা সেন্টারের ধারণক্ষমতা কম থাকায়ে তা সম্ভব হচ্ছে ছিল না। এজন্য আমরা ২০০ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি নতুন ডাটা সেন্টার স্থাপন করব।’
নতুন এই ডাটা সেন্টার স্থাপন হলে ২০১৬ সালেই সরকারি সব সংস্থাকে ই-টেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে জানান তিনি।