বিডি নিউজ ৬৪: নেত্রকোনার কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শামীমের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ইচ্ছা করে বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করানোসহ খাতায় কম নম্বর দেওয়ার অভিযোগে নবম শ্রেণির সকল খাতা জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মহুয়া মমতাজ এসব খাতা জব্দ করেন। জানা গেছে, বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শামীমের কাছে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট না পড়লে বার্ষিক পরীক্ষায় তাদেরকে নম্বর কম দেয়াসহ ফেল করানো হবে বলে তিনি হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
শিক্ষকের এমন হুমকির পরও অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী তার কাছে প্রাইভেট পড়েনি। এরই প্রেক্ষিতে বার্ষিক পরীক্ষায় নবম শ্রেণির ৬৩ জন শিক্ষার্থী গণিতে ফেল করে এবং অনেক শিক্ষার্থীকে খাতায় কম নম্বর দেয়া হয়। অথচ নম্বর কম পাওয়া ও ফেল করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিল। এ ঘটনায় শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শামীমের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আলাদাভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করলেও এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুতাসিমুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মহুয়া মমতাজ বিদ্যালয়ে গিয়ে নবম শ্রেণির সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিতের সকল খাতা জব্দ করেন।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর অভিভাবক রিপন আক্তার জানান, ‘প্রাইভেট না পড়ায় গণিত শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শামীম ইচ্ছে করে আমার ছেলের খাতায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করিয়েছে। অথচ জেএসসি পরীক্ষায় সে ৪.৮০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। শুধু তাই নয় আমার ছেলেকে দশম শ্রেণিতেও উঠতে দিবে না বলে হুমকি দিয়েছেন ওই শিক্ষক’।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, ‘আমি কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট না পড়ার জন্য নম্বর কম দেইনি বা ফেল করাইনি। তবুও যদি কেউ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাহলে আমার কিছুই করার নেই’।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চন্দ্র সাহা খাতা জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মহুয়া মমতাজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে এসে নবম শ্রেণির সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিতের সব খাতা জব্দ করে নিয়ে গেছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মহুয়া মমতাজ জানান, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের অনিয়মের অভিযোগে এসব খাতা জব্দ করা হয়েছে’।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুতাসিমুল ইসলাম জানান, ‘ইচ্ছে করে শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর অভিযোগে খাতাগুলো স্কুল থেকে আনানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করে এসব খাতা যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
bdnews64 বাংলাভাষায় প্রকাশিত দেশের সর্ববৃহৎ সংবাদ পোর্টাল